২য় অক্টোবর রাতে আশুরা আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশন এবং লেবাননের ইউনাইটেড নেশন অফ সেন্টারের উদ্যোগে “নারীদের আদর্শ; হযরত জয়নাব (সা.আ.)” শিরোনামে এক ওয়েব সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই ওয়েব সেমিনারে আলেম, চিন্তাবিদ এবং আশুরার কর্মীগণ বক্তব্য দিয়েছেন।
এই ভার্চুয়াল সেমিনারে উম্মতে ওহেদা সেন্টারের প্রধান হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন “সাইয়্যেদ ফাদী আস-সাইয়্যেদ বলেন: কারবালার ঘটনাটি একটি ঐশিক ঘটনা, কারণ এটি মানবতার সংস্কার এবং মিথ্যার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের লক্ষ্যে সংঘটিত হয়েছিল। এই মহা বিপ্লবটি হযরত ইব্রাহিম (আ.) থেকে হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত ঐশিক নবীদের মিশনের ধারাবাহিকতা।
আশুরা আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক আয়াতুল্লাহ আখতারী এই ওয়েব সেমিনারে সকল মুসলিম ও মানব সমাজকে রাসূল (সা.), আহলে বায়েত (আ.) ও হযরত জয়নাব (সা. আ.)কে জীবনের সকল ক্ষেত্রে আদর্শ হিসাবে ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়ে বলেন: হযরত জয়নাব (সা. আ.) হলেন এমন এক অনুকরণীয় বাগ্মী নারী বিশ্বজগতের যার কোন তুলনা নেই।
আকিলায়ে বানী হাশেম হযরত জয়নাব (সা. আ.)এর জীবনধারায় দেখা যায় যে, তিনি তার ভাই ইমাম হুসাইন (আ.)ক সাহায্য কারার উদ্দেশ্যে মদিনা থেকে তার দুই সন্তানকে নিয়ে কারবালার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। আর এরমাধ্যমে তার সাহসিকতা ও ধৈয্যশিলতার প্রমাণ পাই।
এছাড়াও লেবানন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, গবেষক এবং কবি মাহা খায়রবাক নাসের বলেন: এই মহীয়সী নারীর উজ্জ্বল খুতবাসমূহ অর্থবহ এবং বৌদ্ধিক মূল্যবোধ দ্বারা পূর্ণ।
বিশ্বের মুক্ত জনগণের বিবেকের উপর এই ভাষণগুলির প্রভাবের উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন: হজরত জয়নাব (সা. আ.)এর বক্তৃতাসমুহ মুমিনদের সত্যের জন্য আলোকবর্তিকা।
ইতালি থেকে আহলে বায়েত (আ.)এর ইউরোপীয় অ্যাসোসিয়েশন অব উইমেন ফলোয়ার্সের সভাপতি "হোভেদা জাব্বাক" হজরত জয়নাব (আ।)-এর হিজাব ও ধৈর্যের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে বলেন: হিজাব বিশেষত অ-ইসলামিক দেশগুলিতে মহিলাদের পবিত্রতা, বিস্ময় এবং মর্যাদা দেয়। যারা মহিলাদের প্রদর্শিত করেছেন তাদের সামনে হিজাবী মহিলারা মানবিক ধারণাগুলি প্রতিবিম্বিত করে।
তিনি আরও বলেন: মহিলাদের ধৈর্য সম্পর্কে কুরআনীয় উদাহরণ রয়েছে। ইতিহাস জুড়ে দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে এবং অধিকার রক্ষায় সক্ষম হয়েছে হযরত জয়নাব (সা. আ.)। হযরত জয়নাব (সা. আ.) ছিলেন ধৈর্যধারণের এক গৌরবময় পর্বত। তিনি ধৈর্যধারণের মাধ্যমে ইমাম হুসাইন (আ.)এর এই কালজয়ী আন্দোলনের পথকে পুনরুত্থান ও অব্যাহত রাখত সক্ষম হয়েছেন।
খ্রিস্টান লেখক “আন্টোইন বারা” হযরত জয়নাব (সা. আ.)এর সম্পর্কে একটি বই লিখেছিলেন। ভাই ইমাম হুসাইন (আ.)-এর প্রতিরক্ষায় হযরত জয়নাব (সা. আ.)-এর বীরত্বপূর্ণ অবস্থানের বাক্যগুলির প্রতিও ইঙ্গিত করে আন্টোইন বলেন: বনী উম্মায়ার নেতাদের সামনে হযরত জয়নাব (সা. আ.)-এর জ্বলন্ত ও ধর্মপ্রচারক বক্তৃতা প্রশংসনীয়, যাতে কারবালার অভ্যুত্থান ইমাম হুসাইন (আ.)এর আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এবং হযরত জয়নাব (সা. আ.)-এর মিশনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।
এই ওয়েব সেমিনারের শেষে তিনি হযরত আবা আবদুল্লাহ আল-হুসাইন (আ.)-এর শানে একটি কবিতা আবৃত্তি করেন। এই কবিতাটি তিনি এক সময় ইমাম হুসাইন (আ.)এর মাজারের প্রাঙ্গণে আবৃত্তি করেছিলেন। iqna